লিখেছেনঃ আরভান শান আরাফ
জীবনে সব কিছু তো আর নিজের মতো করে পাওয়া হয় না ।নিজের চাওয়া পাওয়া গুলোকে মাঝে মাঝে ত্যাগ করতে হয় কিছু মানুষের মন মানসিকতার জন্যে ।কিছু মানুষের নূন্যতম চাহীদা পূরণ করার জন্যে ।আমার ক্ষেত্রে ও সে রকমই হয়েছিল তাই আজ সব ভুলে যা ভুল তা না শোধরীয়ে যা ভুল ছিল না তার জন্যে কাঁদছি ।কাঁদছি বললে ভুল হবে কারন আজ আর কাঁদি না ।আজ আমি আমার মতো করে নিজের সর্বস্ব গুছিয়ে নিয়েছি । আমি ইমরান ।আমার জীবনে যা ছিল তার সব আজ গল্পাকারে লিখে দিব কারন আমার জীবনটা গল্পের মতোই হয়ে গেছে ।আজ যাকে নিয়ে আমার এই গল্প তার নাম অনিক ।
জীবনে সব কিছু তো আর নিজের মতো করে পাওয়া হয় না ।নিজের চাওয়া পাওয়া গুলোকে মাঝে মাঝে ত্যাগ করতে হয় কিছু মানুষের মন মানসিকতার জন্যে ।কিছু মানুষের নূন্যতম চাহীদা পূরণ করার জন্যে ।আমার ক্ষেত্রে ও সে রকমই হয়েছিল তাই আজ সব ভুলে যা ভুল তা না শোধরীয়ে যা ভুল ছিল না তার জন্যে কাঁদছি ।কাঁদছি বললে ভুল হবে কারন আজ আর কাঁদি না ।আজ আমি আমার মতো করে নিজের সর্বস্ব গুছিয়ে নিয়েছি । আমি ইমরান ।আমার জীবনে যা ছিল তার সব আজ গল্পাকারে লিখে দিব কারন আমার জীবনটা গল্পের মতোই হয়ে গেছে ।আজ যাকে নিয়ে আমার এই গল্প তার নাম অনিক ।
সে ছিল আমার জীবনের প্রথম আর শেষ ভালবাসা ।আজ সে নেই আমার জীবনে কারন সে চলে গেছে আমার জীবন থেকে ।আজ সেই দুখের কথায় বুক চিরে বলব । তখন আমি এইচ এস সি দিলাম ।ভর্তি টেস্টে কোথাও না টিকে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা মাথায় লাটিমের মতো ঘুরপাক খাচ্ছিল ।পড়াশোনা করি আর না করি বাবার ব্যবসা আমাকেই দেখতে হবে ।তাই ছেড়েই দিলাম ।মন দিয়ে বাবার বালুর ব্যবসা ,ইটের ব্যবসা ,আর ধানের ব্যবসা দেখতে লাগলাম ।জীবনের রাস্তা আমাকে ব্যস্ত থেকে ব্যস্ত করে রাখছিল ।সারা দিন হন্য হয়ে ছুটাছুটি করে রাত্রে এসে সুখের নিদ্রা যেতাম ।আবার সকালে চারটা মুখে দিয়ে ছুটতাম ।
এই ভাবেই চলছিল পঁচিশ বয়সের এক যুবকের দিন গুলো । সেদিন ,আমি ব্যস্ততা সেরে বিকালের দিকে বাড়ি ফিরি ।আমি বাড়ি ফিরতেই অবাক । আজ অনেক দিনপর বড় মামা মামী এসেছে ।তাদের দেখে এতোটাই ভাল লাগছিল যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না ।কারনটা পড়েই বলব সবার আগে বলল ,আমার ভালবাসার কথা ।সে এসেছিল আমার জীবনে এক আলোক হাতে যার আলোই আমার জীবনে আলোকিত হয়ে গিয়েছিল ।সে ছিল আমার মামাতো ভাই ।তার নাম আগেই বলেছি ।অনিক , সে আমার ভালবাসা ।ছোট বেলা তাকে দেখেছিলাম ।বয়সে সে আমার পাঁচ ছয় বছরের ছোট ই হবে ।
সেদিন বড় হওয়ার পর প্রথম তাকে দেখেছি ।তাকে দেখেছি এক স্বপ্নের রাজপুত্রের বেশে ।তাকে দেখে আমার এতোটাই ভাল লেগেছিল যে না হেসে পারলাম না । রুমেই ঢুকতেই দেখি মামা মামী আর অনিক বসে ।প্রথমেই দৃষ্টি পড়ল অনিকের দিকে ।কৌশরের পর পর যৌবনের আগমন যার সে যৌনদীপ্ত ।অনিক ও ছিল যৌনদীপ্ত ।সে চুপ করে বসে ছিল ।আমার চোখে চোখ পড়তেই চোখ ফিরিয়ে নিল ।আমি ও সরিয়ে নিলাম ।কথা সবার সাথে হলো হল না শুধু অনিকের সাথে ।এক অজানা লজ্জা আমাকে ঘিরে ছিল ।আর সেই লজ্জায় হয়তো ছিল আমাদের বাঁধা ।
অনিক আসলো দুদিন হলো ।কিন্তু একবারের জন্যে ও তার সাথে কথা হল ।তাকে দেখেছি খাবারের টেবিলে খেতে ।দুজন পাশা পাশি বসে ।খাবার চিবাচ্ছি ।মাঝে মাঝে আড়চোখে একে অন্যকে দেখছি তার পরে ও কথা হলো না ।কেন হল না কথা ?কীসে ছিল বাধা ?কখনো তাকে দেখেছি আমার বুক সেলফ থেকে বই নিয়ে পড়তে কিন্তু ,আমার অনুমতি ছাড়া ।যে ঘরে প্রবেশ ঘরার ও অনুমতি ছিল না কারো সেই ঘর থেকে সে বই এনে পড়ছিল ।চাইল আমি রাগ করতে পারতাম কিন্তু রাগ আসলো না ।বরং ভাল লেগেছে ।সে আমার বই পড়েছে ।
তৃতীয় দিন সকাল ,রাত করে বাড়ি ফিরাতে সবাই এসে ঘুম ভাঙাতে চেষ্টা করলো কিন্তু কেউ পারল না ।অবশেষ হঠাৎ ,খেয়াল করলাম চেনা একটা হাত আমার গালে আর কেউ নাম ধরে ডাকছে ।ঘুম থেকে ওঠতে ।চোখ খোলতেই যাকে দেখলাম তাতে না ওঠে পারলাম না ।লাফ দিয়ে ওঠে বসলাম ।সে হাতে একটা গামছা ধরিয়ে দিয়ে বলল ,যান ভাইয়া ফ্রেশ হয়ে আসুন আপনার জন্যে এখনো নাস্তা করিনি ।খিদেয় পেটে ইঁদুর বাসা বেধেছে ।তার কন্ঠ শুনলাম ,তার রসপুর্ণ বাক্য শুনলাম ।তার মায়াবী চোখ দেখলাম আর ঠোটের মিষ্টি হাসি দেখলাম ।
আমি তার প্রেমে পড়লাম ।আমি তাকে ভালবাসলাম । সেদিন আর বের হলাম না ।বাসায় রইলাম ।সারা দিন অনিকের সাথে গল্প করলাম ।গল্প করলাম আমার ফেলে আসা দিনের কথা নিয়ে ,আমার প্রিয় আর তার সব কথা নিয়ে ।ঐদিন বিকালে হাঁটতে বের হলাম ।গ্রামের শেষ প্রান্তের বিশাল মাঠ জুড়ে আমরা দুজন হাতে হাত ধরে হাঁটলাম ।মাঝে মাঝে সে আমার দিকে তাকাচ্ছিল ।আমিও তাকাচ্ছিলাম ।কখন যে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল !ইচ্ছে করছিল না বাড়ি ফিরতে ।তবো ও ফিরতে হলো । রাতে আমি আর অনিক ছাদে গেলাম ।আকাশে চাঁদ ছিল না ।ছিল কিছু ঝিকমিক তারা ।তারার আলোয় আমি অনিকের মুখটা দেখলাম ।
একটা মিষ্টি আর শান্ত মুখ ।দুজনে পাশাপাশি ছাদে রাখা দোলনাটাই বসে ছিলাম ।দোলনাটা দুলছিল ।আমি আর সে কথা বলছিলাম ।দুজনে তখন খুব ফ্রী হয়ে কথা বলছিলাম ।হঠাৎ ,সে বলে ওঠল আচ্ছা ইমরান ভাইয়া আপনি কাউকে কিস করেছেন ?আমি বললাম না তো ? আপনাকে যদি কেউ কিস করতে চায় তবে ? তবে ,আর কী ? সে চুপ করে ছিল ।আমি তার মাথাটা আমার দিকে ঘুরিয়ে তার ঠোটে কিস করলাম ।সে লজ্জা পেল ।মাথাটা নিচু করে বসে রইলো ।আমি তার মাথাটা তুলে ধরলাম ।ধীরে ধীরে তার দিকে ঝোকে তার উপরের লাল ঠোটটায় আলতো করে দাঁত দিয়ে চেপে ধরতেই সে আমায় সরিয়ে দিল ।
এইবার সে এগিয়ে এসে আমাকে কিস করতে লাগলো ।আমার ঠোটে তার ঠোট ডুবালে ।এক উদ্মাদ আবেদনে আমি সাড়া দিয়ে তার বুকের উপর আঘাত হানলাম ।তাকে টেনে নিলাম আমার বুকের উপর ।জড়িয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ । আমাদের ভালবাসা থেমে তখনো যায়নি ।সে চলে যায় ।যাওয়ার সময় আমি তাকে একটা সেল ফোন কিনে দেয় ।যখন তখন আমরা ফোনে কথা বলতাম ।মাঝে মাঝে রাত হয়ে যেত ভোর কিন্তু আমাদের কথা শেষ হতো না ।তখনো চলতো আমাদের কথা ।কখনো সে আসতো অথবা আমি যেতাম ।সারা রাত আমার বুকের উপর শুয়ে থাকতো সে ।আমি তার কপালে ঘন ঘন কিস করতাম ।
কখনো তার ঠোটে আমি চুমু খেতাম ।সেই চুমু ধাপে ধাপে চলে যেত এক চির সুখের যৌনতার দিকে ।আমি পাগলের মতো তার বুকে সুখের ঝড় তুলতাম ।সারা রাত ধরে চলতো সেই সুখের ঝড় । এই ছিল আমাদের দিনগুলো ।যেখানে সুখের কোন অভাব ছিল না ।ছিল না ব্যর্থতার কোন ছাপ ।ছিল শুধু এক অপার প্রেম ।প্রেমে ডুবে ছিল আমাদের জীবন । কিন্তু ,ভাগ্য আমাদের সেই সুখ সহ্য করলো না ।পরিবার থেকে চাপ দিতে লাগলো বিয়ের জন্যে ।আমার মা আমার জন্যে বৌ দেখে আসলো ।বিয়ে আমাকে করতেই হবে ।পরিবারের একমাত্র সন্তান ।
বংশধর রক্ষা তো করতেই হবে ।কী করবো মাথায় কিছু আসছিল না ।অনেক পীড়াপিরিতে বিয়েতে মত দিয়ে দিলাম । তবে শর্ত দিলাম বিয়ে করবো কিন্তু কোন অনুষ্ঠান অথবা কাউকে না জানিয়ে । শর্তে সবাই রাজি হলো ।আমি বিয়ে করে ঘরে বৌ আনলাম ।যেদিন আমার বিয়ে ছিল ঐদিন সারা দিন ফোনটা বন্ধ রেখেছি ভয়ে যদি আমাকে ফোন করে অনিক ।আমি তাকে কি জবাব দিব ? বিয়ের দিন রাত্রে ,আমি ছাদে ছিলাম ।ছাদে বসে কাঁদছিলাম ।কী করে পারবো আমি বাঁচতে অনিককে ছাড়া ?যার সাথে একদিন কথা না বলে থাকতে পারি না তার সাথে সারাটা দিন ধরে কথা বলেনি !
আমি কী করে পারলাম অনিক কে এতো বড় ধোকা দিতে ?তখন অনিকের ফোন আসলো ।আমার সাহস হয়নি ফোনটা ধরতে ।রাগে কষ্টে ফোনটা দেয়ালে ছুড়ে মারলাম । ছাদেই ঘুমিয়ে ছিলাম ।সকালে অনিক এসে জাগিয়ে তুলেছিল ।ফোন না ধরার কারন সে ,বাড়ির ভেতর থেকে জেনেই এসেছে ।সে আমার সামনে দাঁড়াল ।তার চোখে মুখে কষ্টের ছাপ ।তার চোখে পানি ।আমার এতো সাহস নেই যে তার সেই পানি চোখ থেকে মুছে জড়িয়ে ধরি ।কারন ,আমি যে ভুল করেছি তা ক্ষমার অযোগ্য ।অনিক কিছু বললু না ।
শুধু আমার দেওয়া মোবাইলটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল ।আমি থাকে আটকায়নি ।সে চলেগেল তার মতো করে ।আমি পড়ে রইলাম ।তার কোন অভিযোগ ছিল না ।ছিল না ধোকা দেওয়া অন্যায়ের বিচার প্রার্থনা ।সে শুধু কেঁদেছিল ।আর চোখ থেকে ঝড়ছিল রক্তাশ্রু । তারপর আমি জানি না অনিক এখন কোথায় ।আজ দু বছর হলো ।তার কোন খবর আমি জানি না ।
আজ আমার বুকটা শুন্য ।রাতে যখন আমার স্ত্রী আমার বুকে মাথা রাখতে চায় তখন তাকে সরিয়ে দেয় ।আমার বুকে যে মাথা রাখবে সে মাত্রই আমার অনিক ।জানি তা স্বপ্ন ।তাহলে তা শুন্যই থাক ।আমার স্ত্রী আমার সন্তানের মা কিন্তু ,আমার ভালবাসা তো অনিক ।আজ আমি একা । মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে চিৎকার করে অনিক কে ডাকতে এই বলে যে অনিক তুমি কোথায় আমি তোমায় ভালবাসি ।
বিঃ দ্রঃ গল্পটি মীজান আহমেদ এর জীবন কাহানী থেকে নেয়া।
No comments:
Post a Comment